ইতিহাস গড়ল আফ্রিকা মহাদেশের দল ছোট্ট দ্বীপদেশ কেপ ভার্দে। প্রবাসী খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) এসওয়াতিনিকে ৩–০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে কেপ ভার্দে। প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল দলটি, যারা ‘ব্লু শার্কস’ নামে পরিচিত।
রাজধানী প্রাইয়ার ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে কেপ ভার্দের খেলা দেখতে উপস্থিত ছিলেন দেশটির রাষ্ট্রপতি জোসে মারিয়া নেভেস। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের দেখা পায় স্বাগতিকেরা।
গত মাসেই জানা গিয়েছিল, নিজেদের গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচের যেকোনো একটিতে জিতলেই ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে তারা। গত বুধবার (৮ অক্টোবর) লিবিয়ার বিপক্ষে ৩–৩ গোলে ড্র করলে অপেক্ষা বাড়ে। তবে এসওয়াতিনির বিপক্ষে আর কোনো ভুল করেনি তারা। ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে শেষ করে বাছাইপর্ব।
মাত্র ৫.২৫ লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশটি পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় ১৯৭৫ সালে। ২০০২ সালের জাপান–কোরিয়া বিশ্বকাপ থেকে যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা শুরু করেছিল তারা। দীর্ঘ দুই দশক পর অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। এর ফলে কেপ ভার্দে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখছে। এর আগে ২০১৮ বিশ্বকাপে একমাত্র আইসল্যান্ডই ছোট দেশ হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিল।
আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে (আফকন) সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চমক দেখিয়েছে কেপ ভার্দে। ২০১৩ সালে অভিষেকেই তারা খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে, পুনরায় সেই সাফল্য আসে ২০২৩ সালেও। বর্তমানে তারা ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৭০তম স্থানে।
কেপ ভার্দে মূলত পর্যটন খাতেই বেশি পরিচিত। খেলাধুলায় বড় সাফল্যের নজির খুবই কম। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে বক্সার ডেভিড দে পিনা দেশের ইতিহাসে প্রথম অলিম্পিক পদক (পুরুষদের ফ্লাইওয়েট বিভাগে ব্রোঞ্জ) এনে দেন।
আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে প্রথমবার প্রবাসী ফুটবলারদের দলে নেওয়ার সাহসী পদক্ষেপ নেয় কেপ ভার্দে। বর্তমানে তাদের দলে রয়েছেন ডাচ, পর্তুগিজ, আইরিশ ও ফরাসি বংশোদ্ভূত একাধিক খেলোয়াড়।
এখন দ্বীপদেশটির মানুষ তাকিয়ে আছে ৪ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের ড্রয়ে, যেখানে জানতে পারবে কোন কোন বিশ্ব পরাশক্তির মুখোমুখি হবে তারা। কেপ ভার্দের আগে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে আলজেরিয়া, মিসর, মরক্কো, তিউনিসিয়া ও ঘানা।