বলিউডের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আলকা ইয়াগনিকের পেশাগত জীবন যেমন সাফল্যমণ্ডিত, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনও অনন্য উদাহরণ হয়ে আছে। ১৬টি ভাষায় দুই হাজারেরও বেশি গান গাওয়া এই কিংবদন্তি শিল্পী গত ৩৬ বছর ধরে স্বামী থেকে দূরে থেকেও দাম্পত্য সম্পর্ককে অটুট রেখেছেন।
১৯৮৯ সালে ব্যবসায়ী নীরজ কাপুরের সঙ্গে বিয়ে হয় আলকার। নীরজ থাকেন শিলংয়ে, আর আলকা মুম্বইয়ে সংগীতজগতে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। দীর্ঘদিনের এই ভৌগোলিক দূরত্ব কোনোদিন তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারেনি। বরং বিশ্বাস, বোঝাপড়া আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাই সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।
তাদের পরিচয়ও বেশ চলচ্চিত্রীয়। রেলস্টেশনে আলকার মায়ের এক বন্ধুর আত্মীয় হিসেবে প্রথম দেখা হয় নীরজের সঙ্গে। প্রথম দেখাতেই ভালো লাগা, তারপর বন্ধুত্ব থেকে প্রেম এবং অবশেষে বিয়ে। যদিও শুরুতে দুই পরিবারের সম্মতি ছিল না, তবু ভালোবাসার শক্তিই সম্পর্ককে টিকিয়ে রেখেছে।
বিয়ের পর নীরজ মুম্বইয়ে ব্যবসা শুরু করলেও সাফল্য পাননি। প্রতিযোগিতায় হার কিংবা প্রতারণার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় তিনি ফিরে যান শিলংয়ে। আলকা-নীরজ দুজনেই মেনে নেন এই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত। কখনও পাঁচ বছর পর্যন্ত না দেখা হলেও নিয়মিত যোগাযোগে সম্পর্কের বন্ধন অটুট থেকেছে।
এক সাক্ষাৎকারে আলকা বলেন, “আমি অন্য কোনো পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হইনি, কারণ আমার নীতি ও বিশ্বাস নীরজের প্রতিই। ভালোবাসাই আমাদের সম্পর্কের মূল চালিকাশক্তি।”
বর্তমানে তারা বছরে এক-দুবার দেখা করেন। কখনও নীরজ আসেন মুম্বইয়ে, আবার কখনও আলকা যান শিলংয়ে। তাদের মেয়ে সায়েশা কাপুরও যুক্ত আছেন মিডিয়ায়।
আলকা ইয়াগনিকের জীবনগল্প প্রমাণ করে, ভালোবাসা মানেই কেবল একসঙ্গে থাকা নয়; বিশ্বাস, বোঝাপড়া আর মানসিক বন্ধনই একটি সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে। দূরত্ব সত্ত্বেও তাদের দাম্পত্য জীবন তাই আজও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।