বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সারাদেশে একযোগে দূষণবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব অভিযানে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন-বিক্রি, যানবাহনের কালো ধোঁয়া নির্গমন, শব্দদূষণসহ পরিবেশ বিনষ্টকারী নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজবাড়ী ও সুনামগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালিত অভিযানে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এ সময় সাত হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি প্রায় ৬৮ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে দোকান মালিক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়।
একই দিনে রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকায় অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া নির্গমণকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এতে চারটি মামলায় ১৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী কল্যাণপুর ও মিরপুরে পরিচালিত অভিযানে সাতটি মামলায় ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ১০টি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, পরিবেশ সংরক্ষণে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ১ হাজার ৬৩৩টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে ৪ হাজার ৩৮টি মামলা দায়েরের পাশাপাশি ২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
অভিযানের সময় পরিবেশ বিধিনিষেধ অমান্যকারী বহু প্রতিষ্ঠান ও ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৪৮৯টি ইটভাটা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, আরও ২১৬টি ভাটাকে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ১৩৩টি ভাটার কাঁচা ইট ভেঙে ফেলা হয়েছে।
এছাড়া ২৫টি অবৈধ পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানাকে সিলগালা করে তাদের সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। একই সঙ্গে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। অভিযানে চারজনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং ১৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১১ ট্রাক সিসা ও ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করে সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।