শত শত বছর ধরে বিশ্বজুড়ে কালোজিরা ও কালোজিরার তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে বিভিন্ন অসুস্থতা ও রোগ প্রতিরোধে। এটি যেমন বীজ হিসেবে কার্যকর, তেমনি তেল হিসেবেও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, কপার, ফসফরাস ও নিয়াসিন—যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। কালোজিরার তেল চুল পড়া কমাতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে, হজমশক্তি বাড়াতে, এমনকি রক্তে সুগার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখতে পারে।
কালোজিরা তেলের বিশেষ উপকারিতাসমূহ:
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে:
একাধিক গবেষণা মতে, দিনে দুইবার অর্ধ চা-চামচ করে কালোজিরা তেল সেবনে রক্তচাপে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এতে থাকা থাইমোকুইনোন উপাদান প্রদাহ কমিয়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
২. কোলেস্টেরল হ্রাস:
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত কালোজিরা তেল উপকারী কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) ও ট্রাইগ্লাইসারাইড কমাতে সাহায্য করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮–১২ সপ্তাহ সেবনে এ উপকার লক্ষণীয়।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ:
নিয়মিত কালোজিরা তেল গ্রহণ স্থূল ব্যক্তিদের বডি মাস ইনডেক্স (BMI) কমাতে সহায়ক। এক গবেষণায় ১২ সপ্তাহ ধরে ৩ গ্রাম তেল সেবনে গড়ে ২.১ কেজি ওজন হ্রাস পাওয়া গেছে।
৪. ব্রণ কমাতে:
ত্বকে প্রদাহ কমিয়ে ব্রণ সারাতে কালোজিরা তেল কার্যকর। গবেষণায় ২০% কালোজিরা তেলযুক্ত লোশন ব্যবহার করে ভালো ফলাফল দেখা গেছে, যেখানে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম ছিল।
৫. চুল পড়া কমানো ও নতুন চুল গজাতে সহায়ক:
যদিও প্রমাণ সীমিত, তবুও কালোজিরা তেল রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়তা করতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
৬. শুক্রাণুর গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়ক:
একটি গবেষণায় অনুর্বর পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি বাড়াতে সহায়তা করেছে কালোজিরা তেল।
ব্যবহারে সতর্কতা:
সাধারণভাবে কালোজিরা তেল নিরাপদ হলেও এটি কিছু ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। তাই যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনের সময় এই তেল গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।