টানা বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে অন্তত ২১টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরের পর বৃষ্টি ও নদীর পানি কিছুটা কমলেও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পরশুরামে ১২টি, ফুলগাজীতে ৯টি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে। মুহুরী নদীর ১১টি, কহুয়া নদীর ৬টি এবং সিলোনিয়া নদীর ৪টি অংশে ভাঙনের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন স্থানীয়রা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, অন্তত ২০ হাজার মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রাথমিক ত্রাণ হিসেবে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই নদী রক্ষাবাঁধের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা করা হয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা এলেই পানির ঢলে গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে, সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগ। এবারের বন্যায় অনেকেই গলা সমান পানি পার হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছেছেন।
বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও প্রবল স্রোতে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। পানি নেমে গেলে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত তিন দিনে ফেনীতে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবারও হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবক ও দমকল বাহিনী দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।