গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। বিচারপ্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালত মামলাটির সূচনা বক্তব্য পেশের দিন হিসেবে আগামী ৩ আগস্ট নির্ধারণ করেছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে ৪ আগস্ট থেকে।
আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক থাকলেও সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পলাতক দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন এবং মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ শুনানিতে অংশ নেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানিতে পাঁচটি পৃথক অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, এই অপরাধগুলো ছিল বিস্তৃত, সুপরিকল্পিত এবং সারা দেশে একই পদ্ধতিতে সংঘটিত। ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে গণহত্যা, নিপীড়ন, হামলা ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়ে। এসব ঘটনা একটি কেন্দ্রীয় আদেশের ভিত্তিতে এবং সাংগঠনিকভাবে পরিচালিত হয়েছে, যেখানে মূল নির্দেশনা এসেছিল তৎকালীন সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে।
তিনি আরও বলেন, “এই অপরাধগুলো যেভাবে সংগঠিত হয়েছে, তাতে আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই—এটি ছিল একটি সিস্টেমেটিক অ্যাটাক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থা একই পদ্ধতিতে দেশব্যাপী এসব কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।”
প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করে, উত্থাপিত অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার অনুমতি চায়।
উল্লেখ্য, ৭ জুলাই মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ঘোষণার জন্য ১০ জুলাই তারিখ নির্ধারণ করেছিল ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।